Monday, January 10, 2011

কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে বছরে আয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা।

কেঁচো চাষ হতে পারে আয়ের প্রধান উৎস:
কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে বছরে আয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা।


ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: কেঁচোকে আর অবজ্ঞা নয়। কেঁচো চাষ হতে পারে আয়ের প্রধান উৎস। বর্তমানে নরসিংদী, সাতক্ষীরা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ, ফেনী ও হবিগঞ্জ জেলার ৫০০ নারী কৃষক এই কেঁচো চাষ করছেন। ইতিমধ্যে ইউএনডিপির তত্ত্ব্বাবধানে ‘কেঁচো চাষ ও সার তৈরি প্রকল্পের’ আওতায় ছয় জেলার ৩৬০ কিষানিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি নরসিংদী জেলার কিষানিরা শুধু কেঁচো বিক্রি করে আয় করেছেন ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আর এই কেঁচো বিক্রি করা হয়েছে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। ফলে কেঁচো এবং কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে এই ছয় জেলার কিষানি বছরে আয় করতে পারবেন প্রায় ২ কোটি টাকা। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা স্বাবলম্বী হবেন অন্যদিকে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে। ইউএনডিপির কেঁচো চাষ ও সার তৈরি প্রকল্পের অ্যাডভাইজার আবু মুহসিন ও বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. এম গুল হোসেন বলেন, কেঁচো দিয়ে তৈরি কম্পোস্ট সার আমাদের দেশের কৃষিক্ষেত্রে বিরাট এক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিতে পারে। তারা আরো বলেন, আমাদের দেশের উর্বর মাটিতে যে সব উপাদান থাকে তার চেয়ে কেঁচো কম্পোস্ট সারে নাইট্রোজেন ৫ গুণ, ফসফরাস ৭ গুণ এবং পটাশ ১১ গুণ বেশি থাকে। এছাড়া সালফার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, বোরন, ম্যাগনিজ, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ। ফলে মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী প্রতিবছর প্রতি শতাংশ জমিতে ৫ থেকে ১০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট ব্যবহার করা হলে ৩ থেকে ৪ বছরে মাটির পূর্ণতা ফিরে আসবে। তখন আর জমিতে কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। এমনকি কোনো ধরনের জৈব সার এবং কীটনাশক ছাড়াই স্বা”ছন্দ্যে কৃষি চাষ-আবাদ করা যাবে। জাপানি কৃষিবিদ নগোচি ও এন্দ্রো বাংলাদেশ সফরকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের মানুষ উ”চ ফলনের আশায় কৃষি জমিতে নির্বিচারে অধিকহারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে। ফলে দিনে দিনে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয়, মাটির স্বাস্থ্য উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। অধিকহারে সেচের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে আর্সেনিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষিপণ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে মানুষ ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে কৃষি কাজে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে প্রকল্পের প্রশিক্ষক হেলাল উদ্দীন জানান, বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিতে গর্ত বা পাকা হাউস করে খুব সহজেই এই কেঁচো কম্পোস্টের প্রকল্প তৈরি করা যায়। এরপর গর্তে বা হাউসে গরুর গোবর, গরুর চোনা, নিম গাছের পাতাসহ বাড়ির সমস্ত ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করার পর বিশেষ ধরনের কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। এসব কেঁচো ময়লা আবর্জনা খেয়ে ফেলার পর আদর্শ জৈব সারে পরিণত হয়। এতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। বর্তমানে এই কেঁচো কম্পোস্ট সার বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে
Source: www.al-ihsan.net

No comments:

Post a Comment