Monday, January 10, 2011

কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে বছরে আয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা।

কেঁচো চাষ হতে পারে আয়ের প্রধান উৎস:
কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে বছরে আয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা।


ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: কেঁচোকে আর অবজ্ঞা নয়। কেঁচো চাষ হতে পারে আয়ের প্রধান উৎস। বর্তমানে নরসিংদী, সাতক্ষীরা, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ, ফেনী ও হবিগঞ্জ জেলার ৫০০ নারী কৃষক এই কেঁচো চাষ করছেন। ইতিমধ্যে ইউএনডিপির তত্ত্ব্বাবধানে ‘কেঁচো চাষ ও সার তৈরি প্রকল্পের’ আওতায় ছয় জেলার ৩৬০ কিষানিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি নরসিংদী জেলার কিষানিরা শুধু কেঁচো বিক্রি করে আয় করেছেন ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আর এই কেঁচো বিক্রি করা হয়েছে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। ফলে কেঁচো এবং কেঁচো থেকে উৎপাদিত কম্পোস্ট সার বিক্রি করে এই ছয় জেলার কিষানি বছরে আয় করতে পারবেন প্রায় ২ কোটি টাকা। এতে একদিকে যেমন কৃষকরা স্বাবলম্বী হবেন অন্যদিকে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে। ইউএনডিপির কেঁচো চাষ ও সার তৈরি প্রকল্পের অ্যাডভাইজার আবু মুহসিন ও বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. এম গুল হোসেন বলেন, কেঁচো দিয়ে তৈরি কম্পোস্ট সার আমাদের দেশের কৃষিক্ষেত্রে বিরাট এক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিতে পারে। তারা আরো বলেন, আমাদের দেশের উর্বর মাটিতে যে সব উপাদান থাকে তার চেয়ে কেঁচো কম্পোস্ট সারে নাইট্রোজেন ৫ গুণ, ফসফরাস ৭ গুণ এবং পটাশ ১১ গুণ বেশি থাকে। এছাড়া সালফার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, বোরন, ম্যাগনিজ, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ। ফলে মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী প্রতিবছর প্রতি শতাংশ জমিতে ৫ থেকে ১০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট ব্যবহার করা হলে ৩ থেকে ৪ বছরে মাটির পূর্ণতা ফিরে আসবে। তখন আর জমিতে কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। এমনকি কোনো ধরনের জৈব সার এবং কীটনাশক ছাড়াই স্বা”ছন্দ্যে কৃষি চাষ-আবাদ করা যাবে। জাপানি কৃষিবিদ নগোচি ও এন্দ্রো বাংলাদেশ সফরকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের মানুষ উ”চ ফলনের আশায় কৃষি জমিতে নির্বিচারে অধিকহারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে। ফলে দিনে দিনে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয়, মাটির স্বাস্থ্য উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। অধিকহারে সেচের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে আর্সেনিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষিপণ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে মানুষ ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে কৃষি কাজে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে প্রকল্পের প্রশিক্ষক হেলাল উদ্দীন জানান, বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিতে গর্ত বা পাকা হাউস করে খুব সহজেই এই কেঁচো কম্পোস্টের প্রকল্প তৈরি করা যায়। এরপর গর্তে বা হাউসে গরুর গোবর, গরুর চোনা, নিম গাছের পাতাসহ বাড়ির সমস্ত ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরাট করার পর বিশেষ ধরনের কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। এসব কেঁচো ময়লা আবর্জনা খেয়ে ফেলার পর আদর্শ জৈব সারে পরিণত হয়। এতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। বর্তমানে এই কেঁচো কম্পোস্ট সার বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে
Source: www.al-ihsan.net

জৈব কৃষির এক সরব অভিযাত্রী : সেলিনা জাহান

জৈব কৃষির এক সরব অভিযাত্রী : সেলিনা জাহান

মাটি ও মানুষের কৃষি ডেস্ক

মাটি আর ফসলের সঙ্গে নিবিড় প্রেম কৃষকের। মাটিতে অংকুরিত ফসল যেমন জানান দেয় তার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা। বিপর্যস্ত মাটিও বলে দেয়, তার শক্তি হারানোর যন্ত্রণা। মাটি তার সর্বস্ব বিলিয়ে চলেছে ফসলের পেছনে। আমরা তাকিয়ে থাকি ফসলের দিকে। কিন্তু ফসলের ভলমন্দের জন্য যে জননীর সকল অবদান সেই মাটির কথা খুব বেশি ভাবি না। যেসব কৃষক নিবিড়ভাবে এই চিত্র উপলব্ধি করেছেন তারা সত্যিই ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।

এই অবস্থায় সত্যিই মাটি বার বার আমাদের কাছে চাইছে পুষ্টিকর খাদ্য। মাটি- যাকে আমরা জননী বলছি, সেই জননীর ব্যথা যেন খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করছেন আরেক জননী। বলছি নরসিংদীর সেলিনা জাহানের কথা। যিনি গ্রামীণ নারীদের চার দেয়ালের ভেতর থেকে টেনে বের করে এনেছেন ফসলের মাঠে। একেকজন নারীর মনে যিনি রোপণ করেছেন স্বাবলম্বি হওয়ার ইচ্ছের বীজ। আর জানান দিয়েছেন, যে নারীর হাত দিয়ে একদিন এই কৃষির আবির্ভাব, কৃষিকে সচল রাখতে হাল ধরতে হবে সেই নারীদেরকেই।

নরসিংদীর শিবপুর, রায়পুরা উপজেলার গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে পেঁৗছেছেন সেলিনা জাহান। সাংসারিক নানা সমস্যা আর সংকটে পিছিয়ে পড়া নারীরা তার চোখেই দেখেছেন এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। সবজি চাষ, পোল্ট্রি খামার, ছোট ছোট ফলের বাগান করে কেউ কেউ স্বাবলম্বিও হয়েছেন। আবার অনেকেই পরিবেশসম্মত ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে সাফল্য দেখিয়েছেন। এই এলাকায় চ্যানেল আই-এর হূদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে বেসরকারি সংগঠন সেফ এগ্রিকালচার ও স্থানীয় কৃষি বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের যে অভিযান শুরু হয়, তা স্বউদ্যোগে এগিয়ে নিয়ে যান সেলিনা জাহান। এ যেন বিষের বিরুদ্ধে এক অভিযান। ক্ষতিকর রাসায়নিকের বিরুদ্ধে এক সামাজিক আন্দোলন। যেখানে রয়েছে মাটি পরিবেশ তথা গোটা জনস্বাস্থ্যকে বাঁচানোর তাগিদ। এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীণ নারীরা সম্পৃক্ত হয়েছেন কেঁচো কম্পোস্ট অর্থাৎ জৈব সার তৈরির একটি কার্যকর অভিযানে। সেখানেও মধ্যমণি সেলিনা জাহান।

নরসিংদী শিবপুর উপজেলার সৈকারচর গ্রাম। ওই গ্রামেই সেলিনা জাহানের বাবার বাড়ি। বাড়িটির পাশেই সেলিনা তার নিজের জমিতে গড়ে তুলেছেন জৈব সার তৈরির মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের আয়বৃদ্ধির প্রকল্প। শুরুটা ২১জন নারী দিয়ে। কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির এই কাজটি এখন এই নারীদের কাছে বাণিজ্যিক এক কৃষি উৎপাদন।

অল্পদিনের উদ্যোগীই এলাকার নারীরা বুঝে গেছেন প্রাকৃতিক লাঙল কেঁচোর গুরুত্ব। কোনটি হাইব্রিড কেঁচো, কোন কেঁচোর সার উৎপাদন ক্ষমতা ভাল, আর কোন কেঁচোর মাধ্যমে ভাগ্য খুলে যাচ্ছে এই হিসাবগুলো এখন সব নারীরই জানা। হাউস তৈরি, গোবর, কলাগাছ ও কচুরিপানার মিশ্রণের মধ্যে সার তৈরির মূল উপাদান কেঁচো প্রয়োগ, ৪৫ দিনে সার উৎপাদন এবং উৎপাদিত সার জমিতে প্রয়োগের উপযোগী করার কাজটির মধ্যে আলাদা এক আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন নারীরা। কারণ এখান থেকে ভালই অর্থ আসছে তাদের। আর এই উৎসাহ এখন পেঁৗছে গেছে বিভিন্ন এলাকায়। সবখানেই সেলিনা জাহানের দেখানো পথে ছুটছেন একে একে অনেকেই। নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় এখন নারীরা সংগঠিত হয়ে গড়ে তুলছেন কেঁচো কম্পোস্ট পস্নান্ট। আর পস্নান্টের একেকটি হাউস একেকজন নারীর কর্মস্থল।

নারীদের এই এগিয়ে আসা এবং তাদের উদ্বুদ্ধ করার পেছনে রয়েছে বিভিন্ন মহলের আন্তরিক উদ্যোগ ও সহায়তা। এক্ষেত্রে সক্রিয় উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের খুব কাছে এসে কেঁচো কম্পোস্ট প্রকল্পকে এগিয়ে নিচ্ছেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক অমৃত বাড়ৈ।

কৃষি বিভাগ কীভাবে সহায়তা করেছে এ প্রশ্ন নিয়ে কথা হল স্থানীয় উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, আমরা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কীভাবে কী করতে হবে তার সহযোগিতায় কমতি করছি না।

তৃণমূলে কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদও জৈব কৃষির এই অভিযানে বেশ উদ্যোগী। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর যশোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন। তিনি জানালেন, এই এলাকায় কেঁচো কম্পোস্ট ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকেই তার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় প্রশিক্ষণের। সেখানেই প্রথম প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সেলিনা জাহান।

এ তো গেল উৎকৃষ্ট জৈব সার উৎপাদনের প্রসঙ্গ। মাঠ পর্যায়ে এই জৈব সার ব্যবহারের কার্যকারিতায় এসেছে সুফল। এবার আমন মৌসুমে জৈব সার ব্যবহার করে তারা কীভাবে উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করেও পেয়েছেন অনেক বেশি ফলন।

যারা সবজি ফসলে এই কেঁচো জৈব সার ব্যবহার করছেন তারা শুধু সারের ব্যয়ই কমাচ্ছেন না, রীতিমত কীটনাশকের খরচ থেকেও রেহাই পাচ্ছেন। এই কেঁচো সার দেয়ার কারণে পোকা-মাকড়েরর আক্রমণ কম হচ্ছে।

এই এলাকায় জৈব সার উৎপাদন তথা এতসব সাফল্যচিত্রের পেছনে সবচেয়ে নিবিড় ভূমিকা সেলিনা জাহানের। যিনি তার জীবনকেই নিবেদন করেছেন স্বাস্থ্যকর কৃষির পেছনে। কৃষিক্ষেত্রে সেলিনা জাহানের পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও একের পর এক নতুন পদ্ধতি সম্প্রসারণের সাংগঠনিক দক্ষতা যেকোনো এলাকার শিক্ষিত সচেতন নারী-পুরুষের জন্যই হতে পারে অনুকরণীয়। সেলিনা জাহান আজ শুধু কৃষকেরই সহায়ক নন, তিনি গবেষক ও বিজ্ঞানীদের সহায়ক, সহায়ক দেশের কৃষি সম্প্রসারণ ব্যবস্থার। দেশের প্রত্যেক এলাকায় এমন উদ্যোগী সংগঠক এখন সময়েরই চাহিদা।
Source: Daily Ittefaq

কেঁচো কম্পোস্ট বদলে দিয়েছে সোনাভানের জীবন

কেঁচো কম্পোস্ট বদলে দিয়েছে সোনাভানের জীবন কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাপনা গ্রামের কৃষাণী সোনাভান এখন আর জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। নিজের বাড়িতে তৈরি কেঁচো কম্পোস্ট সার বদলে দিয়েছে তার ভাগ্য। কমেছে উৎপাদন খরচ, বেড়েছে ফলন।
দাপনা গ্রামের দরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ সোনাভান। এক ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। বড়ছেলেটি ভ্যানচালক। বড়মেয়েটি অষ্টম আর ছোটমেয়েটি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। স্বামী মশিয়ার রহমান পেশায় দিনমজুর। পরের খেতে মজুরির কাজ করেন। কোনো দিন কাজ হয় আবার কোনো দিন হয় না। এভাবেই তারা খেয়ে না খেয়ে এক বিঘা তিন কাঠা জমি কিনেছেন। এ ছাড়াও স্বামী-স্ত্রী মিলে কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে আরো এক বিঘা পরের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছেন। সোনাভান এক বছর আগেও জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে চাষাবাদ করতেন। এতে তিনি জমি থেকে পর্যাপ্ত ফসল পেতেন না। অন্যদিকে জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হতো এবং প্রচুর পরিমাণে সার দেওয়ায় খরচ বেড়ে যেত।
সোনাভান জানান, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে প্রায় দুই হাজার টাকা রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হতো। একপর্যায়ে তিনি জানতে পারেন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড অর্গানিক পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার ছাড়াই চাষাবাদ করার জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর পর সোনাভান হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড থেকে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরি করার জন্য এক হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে ২০০৮ সালে তিনি নিজ বাড়িতে দুই চেম্বারবিশিষ্ট একটি কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপন করেন। প্রথম তিন মাসে প্রায় ২০ মণ কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে তা দিয়ে সোনাভান এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক ধান চাষ করেন। তিনি জানান, গ্রামের অনেক চাষি তার এ পরীক্ষামূলক খামারে কেঁচো কম্পোস্ট সারের পরিবর্তে রাসায়নিক সার ব্যবহার করার পরামর্শ দিতেন। কিন্তু তাদের কথায় কান না দিয়ে নিজের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত কম্পোস্ট সার দিয়ে ধান চাষ করে ওই জমিতে প্রায় ২০ মণ মিনিকেট ধান পান। এ চাষে তার খরচ হয় মাত্র ৭৫০ টাকা। এ ছাড়া জমিতে আগাছা নিধন, ধান কাটা, বাঁধার সব কাজ করেছেন স্বামী-স্ত্রী দুজনে। বর্তমানে সোনাভান ও স্বামী মশিয়ার পরের এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে সবজির লাউখেত এবং অপর এক বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছেন। এসব খেতে তিনি তারই উৎপাদিত কেঁচো কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করে ফসল উৎপাদন করছেন।
সোনাভানের দেখাদেখি দাপনা এলাকার অনেক কৃষক-কৃষাণী অর্গানিক পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার বাদে চাষাবাদ করার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। অনেকে বাড়িতে ছোট ছোট কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপন করে সার উৎপাদন করছেন।
কেঁচো বিষয়ে সোনাভান জানান, একটি সাধারণ কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় এক হাজার টাকা। এ সার তৈরি করতে লাগে গরুর গোবর, কেঁচো আর পচা কলাগাছ। বর্তমানে সোনাভান এলাকার অনেক কৃষকের কাছে ১০ টাকা কেজি হারে কম্পোস্ট সার ও ৪০০ টাকা কেজি কেঁচো বিক্রি করছেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেক কৃষক এসে সোনাভান ও মশিয়ার রহমানকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করাচ্ছেন। তাদের এ চাষাবাদে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাসায়নিক সার ছাড়াই বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যে সম্ভব তার দৃষ্টান্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদরিদ্র কৃষাণী সোনাভান।
Source: Bangladesh Pratidin, 03 July-2010

Sunday, January 9, 2011

পাথরঘাটায় কেঁচো কম্পোস্ট সারের ব্যবহার বাড়ছে

পাথরঘাটায় কেঁচো কম্পোস্ট সারের ব্যবহার বাড়ছে

০০ পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা

সমুদ্র উপকূলের জমিতে লবণের মাত্রা বেশি এবং জৈব পদার্থের পরিমাণ কম থাকায় কৃষক বেশি ফলনের আশায় অধিক পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করে থাকে। এভাবে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে থাকলে এ অঞ্চলের সকল কৃষি জমি অচিরেই উর্বরতা হারাবে। এ অবস্থায় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান ও গণশিক্ষা কেন্দ (সিএমইএস) পাথরঘাটা অঞ্চলের সকল কৃষক ও সচেতন ব্যক্তিবর্গের মাঝে কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণের কাজ করে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ও গণশিক্ষা কেন্দ (সিএমইএস) বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের একত্রিত করে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি, ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। কেঁচো কম্পোষ্ট সার প্রদর্শন ও উৎপাদন করে গত বছর পাথরঘাটা উপজেলার বৃক্ষ মেলায় ৩য় স্থান এবং বরগুনা জেলায় ফল-বৃক্ষ ও কৃষি প্রযুক্তি মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে। সিএমইএস-এর নিজস্ব স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি ও এর ব্যবহার ইত্যাদির উপর বাস্তব শিক্ষা দেওয়া হয় এবং যাতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছাত্র- ছাত্রীগণ নিজে এই সার উৎপাদন করে ব্যবসা করতে পারে তার জন্য সকল প্রকার আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। সিএমইএস পাথরঘাটা উপজেলার নিজ লাঠিমারা অমিরাবাদ ইউনিট অগর্ানাইজার মোহাম্মদ নাজমুল হক বারী জানান, কিশোর-কিশোরীদের মাধ্যমে এর সুফল সম্পর্কে প্রচার করে রাসয়নিক সারের ভয়াবহতা ও কুফলের হাত থেকে উপজেলার ২২ হাজার হেক্টর জমিকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হবে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম মিয়া বলেন, সকল প্রকার জৈব সার হতে কেঁচো কম্পোস্ট সার অনেক উন্নত এবং গাছের সকল খাদ্য উপাদান এ সারের মধ্যে বিদ্যমান। জমির উর্বরতা বৃদ্ধি ও জমির মৌলিক গুণাবলী বজায় রাখতে তিনিও কৃষকদের এই কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
Source: Daily Ittefaq, 14th August-2010

Wednesday, January 5, 2011

কেঁচো করিমকে নাগরিক সংবর্ধনা

কেঁচো করিমকে নাগরিক সংবর্ধনা

মেহেরপুর প্রতিনিধি | তারিখ: ২৯-০৮-২০১০

গোবরে কেঁচো চাষ করে ভার্টি কম্পোস্ট সার তৈরি করে এবার কৃষিতে সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার পাওয়া মেহেরপুরের কৃষক আবদুল করিমকে ১৪ আগস্ট নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুরের অরণী সাহিত্য সাংস্কৃতিক নাট্য চত্বর ও কার্ড সংস্থা জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে তাঁকে এ সংবর্ধনা দিয়েছে। অরণীর সভাপতি নিশান সাবেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল আমিন। অনুষ্ঠানে অরণীর সাধারণ সম্পাদক সাামসুজ্জামান অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, করিমের কেঁচো কম্পোস্ট সার মেহেরপুর জেলার মতো সারা দেশের মাটিতে ব্যবহার হলে বদলে যাবে কৃষির চিত্র। মাটি রাসায়নিক সারের বিরূপ প্রভাবমুক্ত হবে। চাষি কম খরচে এই সার ব্যবহার করে অধিক ও পুষ্টিমানসম্পন্ন ফসল পাবে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর আশ্রায়ণের আবদুল করিম এবার কৃষিতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
গত ২৬ জুলাই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে এই পুরস্কার হাতে তুলে দেন।

Source:

Prothom Alo

ফসলের জন্য কেঁচোসার

ফসলের জন্য কেঁচোসার

উর্বর মাটিতে পাচঁ ভাগ জৈব পদার্থ থাকতে হয়। মাটির পানি ধারণক্ষমতা ও বায়ু চলাচল বাড়াতে পাঁচ ভাগ জৈব পদার্থ থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশের মাটিতে রয়েছে এক দশমিক আট থেকে দুই ভাগ। জৈব পদার্থের পরিমান বাড়াতে কম্পোষ্ট সার, পচা আবর্জনা, সবুজ সারের যেমন ভূমিকা, কেঁচো সারের ভূমিকাও তেমনি অসামান্য।

কেঁচো সারঃ
কেঁচো খাবার খেয়ে মল হিসাবে যা ত্যাগ করে তাই কেঁচোসার। তরিতরকারির ফেলে দেওয়া অংশ,ফলমূলের খোসা,উদ্ভিদের লতাপাতা,পশুপাখির নাড়িভুঁড়ি হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, ছোট ছোট করে কাটা খড়কুটো খেয়ে কেঁচো জমির জন্য সার তৈরি করে। এ সার সব ধরণের ফসল ক্ষেতে ব্যবহার করা যায়।

কী আছে কেঁচোসারেঃ
‘ভার্মি কম্পোষ্ট’ বা কেঁচোসারে মাটির পানি ধারণ করার ক্ষমতা ও মাটি নরম করার ক্ষমতা তো আছেই,এ ছাড়া আছে আটাশি দশমিক ৩২ ভাগ জৈব পদার্থ, এক দশমিক ৫৭ ভাগ নাইট্রোজেন, এক দশমিক ২৬ ভাগ বোরন-যেগুলো অন্যান্য জৈব সারে এত বেশি পরিমাণে নেই।

কেঁচোসার ব্যবহার করলে চাষের খরচ কম হয়। প্রাকৃতিক লাঙ্গল যে কেঁচো তারও সংখ্যা বাড়ে মাটিতে। উৎপাদিত ফসলের বর্ণ, স্বাদ, গন্ধ হয় আকর্ষণীয়। ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।


সহজ উপপায়ে কেঁচো সার উৎপাদনঃ
কেঁচোসার উৎপাদন করতে গভীর মাটিতে যে ছাই রঙের কেঁচো পাওয়া যায় সেগুলো না নিয়ে বরং মাটির ওপর স্তরে থাকা লাল রঙের কেঁচো খুবই ভালো। এছাড়া সার উৎপাদনের আলাদা কেচোঁও পাওয়া যায়।
কেঁচো সার উৎপাদনের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে প্রথমে কোমর সমান গর্ত করে তাতে দুটো রিং স্লাব বসায়ে দিতে হয়। গর্তের তলায় শুকানো ঝরা মাটি দিয়ে কিছু অংশ ভরে দিতে হয় এরপর। তার ওপর বিছাতে হয় কুচি কুচি করে কাটা খড়কুটো, তার উপর আবার ঝুরা মাটি। ঝুরা মাটির উপর পচাঁ আবর্জনার স্তর। আর্বজনার উপর ঝুরা মাটির স্তর দিতে হবে আরো একবার। এবার মুরগির বিষ্ঠার একটি স্তর করে নিতে হয়। বিষ্ঠার উপর আবার ঝুরা মাটি দিতে হয়। শেষের স্তর এ গোবর। এই গোবরে দিতে হয় কেঁচো ছেড়ে। ঝড়-বাতাস আর বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে ওপরে দিতে হবে ছাউনি। এভাবে তিন মাস রেখে দিলেই পাওয়া যাবে কেচোঁ সার।

অন্যভাবেও কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়। এক্ষেত্রে ছায়াযুক্ত স্থানে পলিথিন ব্যাগে আবর্জনা রেখে দিতে হয়, যাতে আবর্জনা পচঁতে পারে। সাত-আট দিন পর পলিথিন বিছিযে দুটি রিং স্লাব পরপর সাজিয়ে তার ভেতর পচাঁ এই আবর্জনা দ্বিগুণ পরিমাণ গোবরের সঙ্গে মিশিয়ে রেখে দিতে হয়। যাতে পঁচা আবর্জনার রস মাটিতে চুয়ে যেতে না পারে। এরপর গোবর মেশানো আবর্জনায়কেঁচো ছেড়ে দিতে হয়। ঝড়-বাতাস, বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে রিং স্লাবের ওপর দিতে হবে ছাউনি।

কেঁচোসার তৈরি করতে দুটি রিং স্লাব ১০০ থেকে ২০০টি কেঁচোই যথেষ্ট। আর সময় লাগবে তিন মাস।। এরই মধ্যে পাওয়া যাবে ফসলের জন্য চমৎকার সার। সচেতন থাকতে হবে রিং স্লাবে যেন কীটনাশক কিংবা ছত্রাকনাশকের মতো কোনো বিষ না পড়ে।
লেখক: সিদ্দিকুর রহমান শাহীন

কেঁচো কম্পোস্ট

মাটির লাল কেঁচো খড়কুটো, ফসলের অবশিষ্টাংশ, রান্নাঘরের উচ্ছিষ্ট এবং মাটির সমন্বয়ে যে জৈব সার তৈরি হয় তাকে বলা হয় কেঁচো কম্পোস্ট সার এবং এ কৌশলকে বলা হয় কম্পোস্ট সার তৈরির কৌশল। এটি সহজ একটি পদ্ধতি যেখানে আবর্জনা দিয়ে ব্যবহার উপযোগী উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি করা যায়।

সার তৈরির কৌশল :
কেঁচো কম্পোস্ট সার জমির এক কোণায়, গাছের নিচে এমনকি ঘরের ভেতর বড় বাক্সে তৈরি করা যায়। খোলা জায়গায় তৈরি করতে হবে। মাটি ও জৈব আবর্জনার স্তূপের সাথে কেঁচো মেশাতে হবে। এরপর স্তূপ ঢেকে রাখতে হবে। কেঁচো দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে এবং কয়েক মাসেই তা কেঁচো কম্পোস্ট সারে রূপ নেয়। ঘরের ভেতর বাক্সে তৈরি করতে হলে বাক্সের ভেতর পুরানো খবরের কাগজ বিছিয়ে তা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হবে। তারপর জৈব মাটি বিছিয়ে দিয়ে কেঁচো ছেড়ে দিতে হবে। মাটি এবং তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে কেঁচো মারা যেতে পারে এ জন্য বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

কেঁচো কম্পোস্ট সারের উপকারিতা :
উৎপাদন ও ফসলের গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়। তুলনামূলকভাবে উৎকৃষ্ট ও বড় আকারের ফল বা সবজি পাওয়া যায়। মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে কেঁচো সার ব্যবহারে সেচের পানি কম লাগে। ক্ষারীয় লবণাক্ত মাটিতেও চাষাবাদ সম্ভব। রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়। জমিতে আগাছার ঝামেলা কম হয়। ফসলের বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে। অধিক কুশি, অধিক ছড়া ও দানা গঠন হয়। মাটির বুনট উন্নত হয়। রাসায়নিক সারের চাইতে খরচ অনেক কম হয়। পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকে।

ফসলে কেঁচো সারের ব্যবহার :
বৃষ্টিনির্ভর ফসল তিল, মুগ ছোলা, মাসকলাই, জোয়ার, বাজরা, সরিষা এসব কম পুষ্টি চাহিদা সম্পন্ন ফসলে রাসায়নিক সার ছাড়াই একর প্রতি মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখী, বার্লি, ভুট্টা ও গম এসব ফসলে কৃষকরা সাধারণত হালকা সেচ, রাসায়নিক সার ব্যবহার করে থাকে। এ ক্ষেত্রে একরপ্রতি মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফলন পাওয়া যায়। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গাজার, আলু, মিস্টি আলু, ঢেঁড়শ, বেগুন, শসা ইত্যাদি ফসলে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে একরপ্রতি মাত্র ১০০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে কৃষকরা অধিক ফলন পাচ্ছেন। ফুলকপি, বাধাকপি, আলু, মরিচ, ধান, টমেটো, রসুন, আদা, হলুদ এসবের ক্ষেত্রে অনুমোদিত রাসায়নিক সারের অর্ধেক মাত্রার সাথে একরপ্রতি মাত্র ১টন কেঁচো কম্পোস্ট সার প্রয়োগের সুপারিশ রয়েছে। বিশেষত ফল বাগানে গাছপ্রতি ১ থেকে ১৫ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফল পাওয়া যায়।

আমাদের দেশের কৃষক ভাইরা কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে কম খরচে অধিক ফলন ঘরে তুলতে পারেন। এতে জমি রাসায়নিক সারের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং উর্বরতা বজায় থাকবে।

লেখক: এম এ কিসমত খান, পাউবো, পাবনা

কেঁচো সার চাষ পদ্ধতি

উৎপাদন বাড়ির সব ধরনের জৈব আবর্জনা যেমন-কলাগাছ, কচুরিপানা, গাছের ঝরাপাতা, আগাছা প্রভৃতির সঙ্গে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ গোবর মিশিয়ে কুচি কুচি করে কেটে পলিথিন ব্যাগে ভর্তি করে ছায়াযুক্ত স্থানে ১০-১২ দিন রেখে দিন। একটি ছায়াযুক্ত উঁচু স্থানে ৫ ফুট বাই ৭ ফুট উচ্চতার ইট-বালু দিয়ে হাউস তৈরি করুন। আবর্জনা মেশানো গোবর হাউসের ভেতর ঢেলে আনুমানিক ৫০০ কেঁচো ছাড়ুন। ওপরে কিছু নারিকেল পাতা দিয়ে তার ওপর চট দিয়ে ঢেকে দিন। শুকনো মৌসুমে প্রয়োজনে ছয়-সাত দিন পর পর এক থেকে তিন কেজি পানি ছিটিয়ে দিন। এ অবস্থায় পরিচর্চা করলে কেঁচোগুলো আবর্জনা খেয়ে কেঁচো সারে পরিণত করবে। হাউস থেকে সার উঠিয়ে শূন্য দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ১ ইঞ্চির পাঁচ ভাগের এক ভাগ ছিদ্রযুক্ত চালনি দ্বারা চেলে সার ও কেঁচো আলাদা করতে হবে। সারকে ফসলে এবং কেঁচোকে আবার নতুন সার তৈরির কাজে ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া গামলা পদ্ধতি, ঘের পদ্ধতি, রিং পদ্ধতিতে কেঁচো সার উৎপাদন সম্ভব।

সাবধানতা পিঁপড়া, উইপোকা, তেলাপোকা, গুবরেপোকা, মুরগি ও বিভিন্ন পাখি কেঁচোর শত্রু। এগুলো কোনো কীটনাশক দিয়ে মারা যাবে না। তবে হাউসের চারদিকে কীটনাশক দেওয়া যাবে। ব্যবহৃত গোবরের সঙ্গে ছাই, বালু, ভাঙা কাচ ইত্যাদি রাখা যাবে না। মুরগি ও পাখির আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য হাউসের ওপর ঢাকনা দিয়ে রাখবেন। কেঁচোকে জীবিত ও সক্রিয় রাখতে হাউসে বেশি পানি দেওয়া যাবে না, আবার পানি শুকিয়ে ফেলাও যাবে না। চালনি দিয়ে চালার সময় হাউসে নির্দিষ্ট জাত ছাড়া অন্য জাতের কেঁচো থাকলে তা আর পরে সার তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে না।

বৈশিষ্ট্য এ সারে গাছের অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্য উপাদানের ১০টিই বিদ্যমান। এ ছাড়া এর মধ্যে গাছের অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি হরমোন ও এনজাইম রয়েছে, যা গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ফলের বর্ণ, গন্ধ, স্বাদসহ অন্যান্য গুণগত মান উন্নত রাখে। কেঁচো সার বীজের অঙ্কুরোদ্গমে সহায়ক। এ সার ব্যবহারে ফসলের উৎপাদন খরচ কমে। সব ফসলেই ব্যবহারযোগ্য। বেলে-দোআঁশ মাটিতে এর কার্যকারিতা বেশি। ফলদ গাছ বা উঁচু জমির ফসলে পর পর তিনবার কেঁচো সার ব্যবহার করলে ডিম থেকে উৎপন্ন কেঁচো ওই স্থানে নিজে থেকেই সার উৎপাদন করতে থাকে। ফলে পরবর্তী দু-তিনটি ফসলে সার ব্যবহার না করলেও চলে।

পুষ্টিমান জৈব পদার্থ দিয়ে সাধারণ সার তৈরির পরিবর্তে কেঁচো সার তৈরি করলে এর পুষ্টিমান সাত থেকে ১০ গুণ বাড়ে। সুহৃদ বাংলাদেশ কর্তৃক কুমিল্লা জেলায় উৎপাদিত কেঁচো সারের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগারে রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর মধ্যে জৈব পদার্থ ২৮ দশমিক ৩২ ভাগ, নাইট্রোজেন ১ দশমিক ৫৭ ভাগ, ফসফরাস ১ দশমিক ২৬ ভাগ, পটাশিয়াম ২ দশমিক ৬০ ভাগ, ক্যালসিয়াম ২ ভাগ, ম্যাগনেসিয়াম দশমিক ৬৬ ভাগ, সালফার দশমিক ৭৪ ভাগ, আয়রন ৯৭৫ পিপিএম, ম্যাংগানিজ ৭১২ পিপিএম, বোরন ০.০৬ ভাগ, জিঙ্ক ৪০০ পিপিএম, কপার ২০ পিপিএম রয়েছে।

ব্যবহার পেঁপে, কলা, লেবু, পেয়ারা প্রভৃতি ছোট আকারের ফলদ গাছে বছরে একবার প্রতি গাছের গোড়ায় চারদিকে গোল নালা কেটে গাছপ্রতি পাঁচ কেজি কেঁচো সার দিয়ে ওপরে মাটিচাপা দিতে হবে। শাকসবজির জমিতে কেঁচো সার মিশিয়ে বীজ বা চারা লাগাতে হবে। ধান, পাট প্রভৃতি জলাবদ্ধ অবস্থায় জন্মানো ফসলে বিঘাপ্রতি ৫০ কেজি কেঁচো সার শেষ চাষ-মইয়ের আগে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। ফুল গাছে গাছপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ গ্রাম সার চারা লাগানোর সময় গাছের গোড়ায় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে চারা লাগাতে হবে।
Source: www.agrobangla.com

Tuesday, January 4, 2011

কেঁচো-জৈব সার: কেঁচো-কম্পোস্ট

কেঁচো-জৈব সার: কেঁচো-কম্পোস্ট


কেঁচো কম্পোস্ট একটি জৈব সার যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয় । গাছের পাতা, খড়, গোবর, লতা, পাতা, পঁচনশীল আবর্জনা ইত্যাদি খেয়ে কেঁচো মলত্যাগ করে এবং এর সাথে কেঁচোর দেহ থেকে রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি হয়।


kecho compost1.JPG

ছবি:কেঁচো কম্পোস্ট

ছবি তোলার স্থান:নেত্রকোনা।

# বাজার সম্ভাবনা # মূলধন # প্রশিক্ষণ # প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান # কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির নিয়ম # আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ

বাজার সম্ভাবনা

রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং রাসায়নিক সার ব্যবহারের খরচও বেশী। কেঁচো কম্পোস্টের উপকারিতা অন্যান্য কম্পোস্টের চেয়ে বেশি। কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি খরচ কম এবং রাসায়নিক সারের অপকারিতা মাথায় রেখেই দিন দিন জৈব সারের ব্যবহার বাড়ছে। আর তাই কেঁচো কম্পোস্টের চাহিদা ও বাজার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেঁচো কম্পোস্ট বিক্রি করতে উপজেলা পর্যায়ে ব্যবসায়ী, কৃষক, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তৈরি করা কম্পোস্ট সার বিক্রির জন্য প্রচার অভিযান চালাতে হবে। সেক্ষেত্রে-

  • পোস্টার লাগানো যেতে পারে।
  • সাইনবোর্ড লাগানো যেতে পারে।
  • ভ্যান গাড়ীতে করে প্রদর্শন করা যেতে পারে।
  • বাজারের সাথে সক্রিয় যোগাযোগ রাখতে হবে।

মূলধন

আনুমানিক ৬০০-৭০০ টাকার যন্ত্রপাতি এবং ২৪০০-২৫০০ টাকার কাঁচামাল কিনে বেশ বড় আকারেরর কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি ও বিক্রি ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বড় আকারে কেঁচো কম্পোস্ট ব্যবসা শুরু করতে যদি নিজের কাছে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তাহলে স্থানীয় ঋণদানকারী ব্যাংক (সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক , রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক)বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক, প্রশিকা)থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।

প্রশিক্ষণ

কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি প্রক্রিয়া খুবই সহজ। এর জন্য আলাদা ভাবে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে ধারণা নিয়েই এ কাজ শুরু করা যেতে পারে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান


  • স্থায়ী উপকরণ

উপকরণ

পরিমাণ

আনুমানিক মূল্য (টাকা)

প্রাপ্তিস্থান

ঘর তৈরি/শেড তৈরি

১ টি

৩০০-৩১০

নিজেই তৈরি করা যায়

পানি নিরোধক কাগজ

৪০ ফিট

২০০-২১০

হার্ডওয়ার দোকান

মাটির বড় পাত্র

৫টি

১৫০-১৬০

কুমার বাড়ী

মোট=৬৫০-৬৮০ টাকা

তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, জামালপুর, নভেম্বর ২০০৯।

  • কাঁচামাল

উপকরণ

পরিমাণ

আনুমানিক মূল্য (টাকা)

প্রাপ্তিস্থান

কেঁচো

২০০০ টি

২০০০-২০৫০

কেঁচো বিক্রির পাইকারী দোকান

গোবর

১২০০ কেজি

৩০০-৩২০

বাড়ী থেকে কেনা যেতে পারে

রান্না ঘরের উচ্ছিষ্ট

৫০ কেজি

-

বাড়ী থেকে সংগ্রহ করা যায়

পাতলা চট

৪০ ফুট

১৩০-১৩৫ টাকা

হার্ডওয়ারের দোকান

মোট=২৪৩০-২৫০৫টাকা

তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, জামালপুর, নভেম্বর ২০০৯।

কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির নিয়ম

  • স্থান নির্বাচন

    kecho compost2.JPG kecho compost3.JPG

    ছবি: কেঁচো কম্পোস্ট উল্টে দেয়া হচ্ছে

    ছবি তোলার স্থান:নেত্রকোনা।

    ছবি: কেঁচো কম্পোস্ট পরীক্ষা করা,

    ছবি তোলার স্থান:নেত্রকোনা।


গাছের ছায়ায় মাটিতে গর্ত করে সার তৈরি করতে হয়। সেজন্য ২ মিটার লম্বা, ১ মিটার চওড়া ও ১ মিটার গভীর গর্ত করতে হবে। গর্তের আকার এমন হবে যেন দুই থেকে পাঁচ হাজার কেঁচো থাকতে পারে। এ পদ্ধতিতে মাসে ১০০ কেজি করে সার তৈরি করা সম্ভব হবে। গর্তের উপর ছনের চালা দিতে হবে। তবে মাটির গর্তের চেয়ে মাটির বড় পাত্রে (গামলা) কম্পোস্ট তৈরি করলে কেঁচোগুলো হারিয়ে বা নষ্ট হয় না। তাই বর্তমানে গামলার ব্যবহারই বেশি।

তৈরি ঘরের মধ্যে বা গর্তের তলায় ইটের টুকরো বা বালি বিছিয়ে নিতে হবে।

  • ইটের বা বালির স্তরের উপরে ১৫-২০ সে.মি. গভীর ভালো দোঁ-আশ মাটি বিছিয়ে দিতে হবে এবং শ’খানেক কেঁচো বা কোঁচোর ডিম ছড়িয়ে দিতে হবে।
  • কেঁচোর উপর কাঁচা গোবর বিছিয়ে দিতে হবে।
  • এই স্তরের উপর শুকনো পাতা বা খড় দিতে হবে।
  • মাঝে মাঝে অল্প পরিমাণ পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • এভাবে ৪ সপ্তাহ রাখার পর সদ্য কাটা গাছের পাতা ও কচি ডাল ৫ সে. মি. পুরু করে বিছিয়ে দিতে হবে।
  • গর্ত না ভরা পর্যন্ত ৩/৪ দিন অন্তর অন্তর খোসা, পাতা ইত্যাদি দিতে হবে ও ১৫ দিন পর পর ওলট-পালট করতে হবে।
  • কম্পোস্ট তৈরির উপাদান গুলো কালচে রং ধারণ কররে জৈব সার তৈরি হবে। এসময় পানি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সার তৈরি হয়ে গেলে কেঁচো গুলো গর্তের নিচে চলে যাবে।
  • এবার ঝুরঝুরে দানাদার সার গর্ত থেকে বের করে শুকিয়ে ছাঁকনিতে ঢেলে (পলিথিন ব্যাগে) প্যাকেট করতে হবে।

  • সাবধানতা

চালুনীর সময় সাবধান থাকতে হবে যেন শিশু কেঁচো মারা না যায়। শিশু কেঁচোগুলো পুরানো গোবরে রাখতে হবে। পিপঁড়া ও পোকার কামড় থেকে কেঁচোগুলোকে সাবধানে রাখতে হবে।

আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ
  • খরচ (এক মাসের জন্য)

কাঁচামাল বাবদ খরচ আনুমানিক

২৪৩০-২৫০৫ টাকা

যন্ত্রপাতির অবচয় (ক্ষতি) বাবদ খরচ

৫-৬ টাকা

মোট= ২৪৩৫-২৫১১ টাকা

তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, জামালপুর, নভেম্বর ২০০৯।

  • আয়

এ পরিমাণ কাঁচামাল দিয়ে মাসে ২০০০ কোঁচোর মাধ্যমে ১০০ কেজি সার উৎপাদন করা সম্ভব।

১ কেজি সার বিক্রি হয়=৭-৮ টাকা

১০০ কেজি সার বিক্রি হয়=৭০০-৮০০ টাকা

নতুন জমানো কেঁচো বিক্রি=২০০০-২২০০ টাকা

মাসে মোট আয় =(সার+কেঁচো)=২৭০০-৩০০০

তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, জামালপুর, নভেম্বর ২০০৯।

  • লাভ

সার ও কেঁচো বিক্রিতে আয়

২৭০০-৩০০০ টাকা

সার তৈরিতে খরচ

২৪৩৫-২৫১১ টাকা

লাভ=২৬৫-৪৮৯ টাকা

অর্থাৎ ২৬৫-৪৮৯ টাকা লাভ করা সম্ভব। তবে সময় ও স্থানভেদে এর কম বা বেশি লাভ হতে পারে।

তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, জামালপুর, নভেম্বর ২০০৯।

যে কোন ব্যক্তি বাড়ীতে বসে নিজেই কেঁচো কম্পোস্ট উৎপাদন ও বিক্রি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন ১ : কেঁচো কম্পোস্ট তৈরিতে কি কি কাঁচামাল লাগে ?

উত্তর : কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি করতে কেঁচো ছাড়াও গোবর, লতা-পাতা, ধানের খড়, শাক-সবজির অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি প্রয়োজন হয়।

প্রশ্ন ২ : কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি করতে কি পরিমাণ মূলধন দরকার হতে পারে?

উত্তর : আনুমানিক ৩০০০ টাকার মূলধন নিয়ে কেঁচো কম্পোস্ট ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।

প্রশ্ন ৩ : কেঁচো কম্পোস্ট তৈরিতে কি পরিমাণ লাভ হতে পারে।

উত্তর : প্রতি মাসে আনুমানিক ৩০০-৪০০ টাকা লাভ করা যেতে পারে।

Source: www.infokosh.bangladesh.gov.bd

Monday, January 3, 2011

কেঁচো-কম্পোস্ট - বই

কেঁচো-কম্পোস্ট

- ড. মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

বইয়ের প্রকাশকঃ মাওলা ব্রাদার্স।
প্রধান কার্যালয়
২৮, টিপু সুলতান রোড, ঢাকা ১১০০।
বিক্রয় কেন্দ্র
৩৯ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০।
ফোনঃ ৭১৭৫২২৭, ৭১১৯৪৬৩, ৭১১৯০৩৮।
ই-মেইলঃ mowla@accesstel.net
বইয়ের মূল্যঃ ৩০টাকা।

Sunday, January 2, 2011

Vermiculture:SHGs make eco-friendly compost

Vermiculture:SHGs make eco-friendly compost

Posted 2009-04-17 17:50 by ashis

Kalyani Municipal authorities have helped Self Help groups(SHGs) produce organic compost through vermiculture. The method is very simple and it takes only two weeks to produce compost from bio-degradable solid waste.A Muncipality official, speaking to MYSMENews, said a large pit was first dug in a field.bio degradable solid waste was poured into it. Plastic, iron and other materials were removed. Then centipede worms were released into the mixture.The worms multiplied quickly and almost covered the pit. The waste material, after a few days, crumbled into small grainy pieces. It had turned into compost The transition took two weeks At present, local SHGs sell such organically produced compost commercially. The All India Council for Mass Education and Development (AICMED) also offers expertise for vermiculture projects and maintains two experimental pits.


ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্ট

Posted 2009-04-09 11:53 by niladri

বাড়ির প্রতিদিন তৈরি হওয়া জঞ্জালও যে কোনভাবে কাজে আসতে পারে এটা বোধ হয় কল্যাণীর নাগরিকরা হয়তো একসময় ভাবতেই পারেননি। বাড়ির বর্জ্য জঞ্জাল যে এভাবে রোজগারের হাতিয়ার হতে পারে সেটা ভাবনার বাইরেই ছিল – ভূমিজ, সঞ্চিতা, উন্নতি, চেতনা, সংহতি, সার্বিক, বন্ধনের মত ৩৫ টি স্বয়ম্ভর সংস্থাগুলির সদস্যাদের। বাড়িতে প্রতিদিনই গাছের পাতা, গবাদি পশুর মল ও নানা বর্জ্য ইত্যাদি বহু রকমের জৈব উপাদান তৈরি হয়। সাধারণত সেসব আমরা ফেলে দিই, পরিবেশ দূষণও ঘটাই। কিন্তু এগুলি যদি নিয়ম মেনে সংগ্রহ করে জৈব সারে পরিণত করা যায় তবে তো কথাই নেই। কল্যাণী পৌরসভার কম্যুনিটি ডেভেলাপমেন্ট সার্ভিস -২ এর অন্তর্গত সাতটি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী মিলে জৈব সার উৎপাদনে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। প্রকল্প অধিকর্তা মৌসুমি পাল জানান যে পৌরসভার ১৫ টি ওয়ার্ডেরই মহিলারা এ প্রকল্পে সরাসরি যুক্ত। প্রায় ৩৫০ জন মহিলা এই প্রকল্পে আছেন। প্রকল্পের শুরুতে মহিলাদের একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ ও তার পরে পেশায় প্রবেশের জন্য প্রত্যেক মহিলাদের মাথাপিছু ৬০০ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্টের জন্য একটি করে সিমেন্টের পাত্র ও ৪০০ টি করে কেঁচো (ভার্মি) দেওয়া হয়। "এই কেঁচোগুলি চীন থেকে আমদানি করা হয়েছিল, বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা, যারা এ প্রকল্পে কারিগরী পরামর্শ দিয়েছিলেন তারাই জানান যে জৈব সার তৈরিতে এর ভূমিকা অসাধারণ, আর এই কেঁচোগুলি আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে", মৌসুমি জানান। ন্যাশানাল হর্টিকালচার মিশন, বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও আরও অনেক সরকারি বেসরকারি সংস্থা এখানকার সারের গ্রাহক। এখানকার উৎপাদিত সারের ব্র্যান্ড নেম 'মাটি সুরক্ষা'। মৌসুমি পাল আরও জানান "আমরা স্থানীয় স্তরেও খুচরো বিক্রী করি, ২ কিলো, ৫ কিলো, ২৫ কিলো এবং ৫০ কিলোগ্রামের প্যাকেটে 'মাটি সুরক্ষা' র যথেষ্ট কদর রয়েছে।" সার উৎপাদন করে বাড়ি থেকেই মহিলারা নিয়ে আসেন, প্রধান প্ল্যান্টে প্যাকেজিং হয়। এভাবে মহিলারা মাসে ৯০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করছেন। মূলত বস্তি অঞ্চলের মহিলারা এভাবেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন কল্যাণীতে।

Source: www.mysmenews.com

Bio-gas catches on in rural areas

Bio-gas catches on in rural areas
Bdnews24.com . Dhaka


Bio-gas use is rising in rural areas as villagers have started seeking substitutes for increasingly pricey kerosene, firewood, and straw.
Simple bio-gas plants in the homestead are not only supplying fuel for cooking but also lighting up homes that have no access to the national grid.
A typical bio-gas plant can be used for more than 30 years and requires only 200 square feet area, using cow-dung and chicken excrement to produce energy.
Some 12,000 plants have already been set up in different areas around the country.
A resident of Milpur in the Sadar upazila in Thakurgaon, Farida Nazneen, has been cooking with bio-gas for one year.
She told the news agency, ‘The fire from the gas doesn’t create smoke, it doesn’t leave black stain on the cooking utensils or in the kitchen, and on top of all this, and it produces electricity.’
‘Earlier, when I used to cook with firewood, there was a lot of smoke and it hurt my eyes. With biogas it’s much easier,’ she added. Farida set up the plant at her house with the help of a local non-government organisation.
At present, 29 non-government organisations are working with the government’s Infrastructure Development Company Limited to set up and popularise bio-gas across Bangladesh.
IDCL’s executive director and chief executive officer Islam Sharif said, ‘Bio-gas plants are being set up in many areas of the country under National Home-economics Bio-gas and compost-manure project.’
International NGO, SNV-Netherlands Development Organisation and the German government’s development agency KFW are jointly financing this project, he informed.
Bio-gas is produced from composting organic wastes and excrement within, said Islam Sharif.
According to him, only 3 per cent of the total population, mostly of which were city dwellers, use natural gas for cooking delivered by gas pipelines. On the other hand, 70 per cent of the people who live in villages were denied this privilege, he added.
Across rural Bangladesh, people use firewood, dry leaves and cow-dung as fuels. Most of these fuels damage the environment, or cause deforestation, or even loss of fertility in nearby land.
‘Cow-dung and excrement were considered a nuisance and a waste, but now with the development of technology, the waste is being transformed into an asset,’ Sharif said.
The bio-gas, made from cow-dung and chicken excrement can be used not only as fuel, but the compost-manure from bio-gas plants can be used as environment-friendly organic fertiliser.
‘Considering all these advantages, we are working to make bio-gas more popular,’ the IDCL chief said.
The IDCL recently observed bio-gas week from May 28 to June 5 aimed at raising awareness about this clean source of fuel, through organising rallies and folk music concerts to motivate people to adopt the technology.
On May 28, Majpara union of Pabna district was declared a ‘Bio-gas-dependent Union.’
In 2009, Tikuria village of Mymensingh had been declared a ‘Biogas Union’ to recognise how fast the technology had been adopted by the people of the village.
‘Within 2011, an upazila will be declared as a ‘Biogas Upazila’ and by 2012, a district will be declared ‘Biogas district,’ said Islam Sharif.
IDCL’s secretary SM Farmanul Islam told the news agency that a six-year long project from April 2006 to December 2012 is under implementation.
The project plans to build 37, 269 plants by 2012. More than 12,000 plants had already been built and an additional 10,000 plants are planned within this year, he said.
A homestead bio-gas plant costs between Tk 25,000 and Tk 30,000. IDCL provides Tk 9,000 as a start-up subsidy. With progress, IDCL lends about Tk 14,000 to 16,000. The plant owner is responsible to put up the remainder of the required money.
Bio-gas residue is a high category compost-manure. Cultivable lands and fish-growing ponds can benefit using this manure.
DISA, an associate organisation of IDCL is working in village levels to set up the plants.

Source: www.newagebd.com, 15th July, 2010

Saturday, January 1, 2011

Bio-slurry: An untapped black gold

Bio-slurry: An untapped black gold

M. Fokhrul Islam

More than 70 per cent of the population in Bangladesh is engaged in agriculture. Therefore, any technology that can influence agriculture or gets influenced by the agricultural practices becomes a subject of concern not only to the biogas user but also to the nation as a whole. Bio-gas technology is becoming popular in rural Bangladesh in view of escalating costs of fuels as well as soaring prices of chemical fertilizers which our farmers find difficult to buy for their sustainable crop production.
The first biogas plant was constructed in 1972 at the premises of Bangladesh Agricultural University (BAU), Mymensingh. Thereafter through several projects under different organizations constructed about 24 thousand biogas plants in different parts of the country. Infrastructure Development Company Limited (IDCOL), a state-owned non banking financial institution, is implementing National Domestic Biogas and Manure Programme (NDBMP) with the participation of different partner organizations (POs) and with support from the Netherlands Development Organization (SNV) and Kreditanstalt für Wiederaufbau (KfW) since July 2006. Under this programme a total of 37,629 biogas plants will be constructed during 2006-2012.
Two major outputs from a biogas plant are the gas and the bio-slurry. Bio-slurry is the decompose product produced from organic materials in a reduction process in presence of anaerobic microbes in the biogas digester. It is an excellent soil conditioner as it adds humus and supports the micro-biological activity in the soil increasing the soil porosity and water holding capacity. It has greater fertilizer value for crops and feed material for earthworms, livestock and fishponds. The loss of nitrogen is minimum in case of bio-slurry as compared to Farm Yard Manure (FYM) and compost due to anaerobic condition in the digester.
Declining in soil fertility is a common scenario in Bangladesh though magnitudes vary in different Agro-Ecological Zones (AEZ). Decline in soil fertility occurs through a combination of lowering of soil organic matter and loss of nutrients. In Bangladesh, depletion of soil fertility is mainly due to exploitation of land without proper replenishment of plant nutrients in soils.
A medium fertile soil should have an organic matter content of 1.8-3.4%. But in Bangladesh, most soils have less than 1.7%, and some soils have even less than 1% organic matter. The average organic matter content of top soils has decline by 20-46% over past 20 years due to intensive cultivation. To arrest further declination of soil fertility proper use of bio-slurry alone or in combinations with chemical fertilizers may be good options. Bio-slurry considered as quality organic fertilizer is environmental friendly, has no toxic or harmful effects and can help to a great extent rejuvenate the soils by supplying organic matter, considerable amounts of macro and micro nutrients. This organic fertilizer has also liming effects. The poultry litter fermented organic fertilizer is more effective in acid soils to reduce acidity and thereby protects crops from harmful effects of aluminum.
The farmer needs to use chemical fertilizer to increase the crop production. However, if only chemical fertilizers are continuously applied to the soil without adding organic manure, productivity of land will decline. On the other hand, if only organic manure is added to the soil, desired increase in crop yield cannot be achieved. Neither bio-slurry nor chemical fertilizer alone is enough to meet demand of soil-crop systems. Fertility trials carried out in Bangladesh and elsewhere have revealed that optimum results can be achieved through the combined application of both chemical and organic fertilizers. NDBMP supported on-station and on-farm trials conducted by Bangladesh Agricultural Research Institute (BARI) in major AEZs with major crops found that yield can be increased by 12-25%. In countries where biogas technology is well developed, for instance in China, there are evidences that productivity of agricultural land can be increased to a remarkable extent with the use of bio-slurry in combination with chemical fertilizer.

Organic fertilizer
Bio-slurry is a 100% organic fertilizer most suitable for organic farming. This fertilizer can effectively be used for all high value fields and horticultural crops including vegetables, fruit, flowering as well as ornamental plants and roof top garden. This organic fertilizer can also profitably be used for forest nurseries, public parks and roadside plantations. Organically produced crops and fruits are healthy and nutritious, and have better shelf life as well as higher market value. Demand for organically produce crops are increasing day by day in Bangladesh and elsewhere in the world.
An important point to be noted is that the anaerobic fermentation in the biogas digester does not result in any absolute increase in total nutrient content of bio-slurry compared to that of the dung fed to the plant. But the organic fraction of nitrogen is converted into a form that is more readily usable by plants. The fertilizer value attributed to the bio-slurry is due to its enrichment in humic substances (8.6 to 21.6% humic acid) and macronutrients which are supplied to soil.
Fresh bio-slurry should be allowed to settle for few days in the slurry pit and mixed with water at the ratio of 1:1-2 before applying to the fruit or vegetable crops grown close to the house with the help of bucket or pale. The ammonia content of the fresh slurry can harm the tender fruits and vegetables if applied immediately.
By employing simple collection and preservation techniques, the quantity and quality of bio-slurry in terms of weight and plant nutrient content can be considerably improved and preserved for later use in field or garden crops. It is advisable to construct at least two slurry pits so that each of them can be emptied alternatively. The pit volume should be equal to the volume of the biogas digester. To protect the bio-slurry in pits from sun and rain, shade should be provided by constructing a roof made of local materials such as bamboo and rice/wheat straw over the pits or from corrugated iron sheet or any other more permanent materials. Make the structure sufficiently strong to withstand winds. Creeper vegetables can be grown on the roof of shade.
To derive maximum benefit from organic manure application, the compost should be well decomposed and be of good quality. Use of un-decomposed organic manure should be avoided, as it will do more harm than good. Un-decomposed materials when applied to the soil attract insects and take a longer time (i.e. more time than the life cycle of the crop) before the plant nutrients present in them are converted in the form that can be assimilated by the plants. It is essential to know whether the compost has attained the stage of maturity before applying it in the field. In practice, mature compost can be identified from its physical appearance. Matured compost has a dark brown colour whereas undigested slurry is light brown or greenish. When pressed between two fingers, matured compost is friable in consistency and can be easily distributed in the field.

3 million plants
It has been estimated that there is potential of establishing about 3 million biogas plants in Bangladesh. If the 65 percent of the potential is tapped (2 million), there is a possibility of producing 12 million metric tons of bio-slurry (dry weight basis) per year from the average family-sized (2.4 m3) biogas plants. If calculated in terms of nutrients, 165,000 ton of N; 92,400 ton P, 40,800 ton of K and 39,600 MT of S would be available per year as fertilizer. If a farmer applies 6 tons of dry bio-slurry in crop field, s/he can reduce 60 kg urea, 48 kg TSP and 60 kg MoP fertilizer for selected crop. In Bangladesh, if properly managed, bio-slurry could play a major role in supplementing the use of expensive chemical fertilizers.

The writer is Bio-Manure Management Adviser, SNV Bangladesh.

Source: www.weeklyholiday.net, 11th June 2010

First CDM bio-fertiliser released in market

First CDM bio-fertiliser released in market

The first bio-fertiliser produced in the country under the Clean Development Mechanism (CDM) was formally released in the market Saturday, reports BSS.

The bio-fertiliser, named Waste Concern Jaiba Sar (WCJS) is being produced by Waste Concern and World Wide Recycling (WWR) of the Netherlands in the world's first organic waste composting project at Bhulta in Narayanganj using the Carbon Trading from November last.

The price of bio-fertiliser fixed at Tk 5.0 per kilogram, is being produced from vegetable waste with financial support of the Netherlands Foreign Ministry and the Netherlands Development Finance Company (NDFC).

To mark the release of the bio-fertiliser in the market, a function was jointly organised by the Netherlands Embassy and NDFC at the Daily Star office in the city Saturday.

Ambassador of the Netherlands in Bangladesh Bea Ten Tusscher launched the fertiliser while Chief Executive Officer of Dutch Bank for International Finance Nanno Kleiterp gave the welcome speech. Executive Editor of the Daily Star Syed Fahim Munaim moderated the function.

Waste Concern Director Iftekhar Enayetullah and Executive Director AH Md Maqsood Sinha of Waste Concern and Jan Boone of WWR Netherlands made a presentation on the project.

The Dutch Ambassador, in her remarks said that this project has set a unique example of making waste into valuable resources. She hoped that the project would also improve environment in the market places.

The compost project will have two more plants around Dhaka city within the year 2010 and this project will recycle 700 tonnes of organic waste everyday, he added.

Later, Bea Ten Tusscher and Nanno Kleiterp handed over fertiliser bags to some dealers and farmers.

They also visited the organic vegetable market at Karwan Bazar to observe waste collection system of WWW Bio-Fertiliser being operated in partnership with Dhaka City Corporation.

Source: www.thefinancialexpress-bd.com, 22th March-2009

Compost fertilisers help raise crop yields in N-dists

Compost fertilisers help raise crop yields in N-dists

RANGPUR, Oct 21: Hundreds of people including the distressed women have successfully changed their fates by producing composts fertilizers at their homesteads both in the main land and char areas in recent years in northern Bangladesh, reports BSS.
After purchasing, the farmers have been applying those in their crop fields and getting increased crop productions side by side reviving the soil health by adding necessary soil nutrients, officials, experts and scientists said.
Compost fertilizers are being produced generally using dung of the cattle heads, wood dust, oil cake and water, water hyacinths, some organic manure, various wastages, leaves and other waste materials.
Talking to BSS Thursday, the agri- scientists and experts favoured expanded production and application of compost fertilizers for increasing crop productions by up to fifteen percent and improving soil health by reducing uses of chemical fertilizers and pesticides.
Agri-scientist DR MA Mazid said that crop production might further increase if balanced use of chemical fertilizers could be ensured by adopting conservation agriculture technologies.
Additional Director of the DAE Mohsin Ali said that compost fertilizers could improve soil textures, fertility, increase its water and nutrient storing capacities, upgrade sandy land into sandy-loamy and sandy loamy into loamy and then into clay soil in course of time.
The annual consumption of urea, TSP, MoP and other fertilizers and pesticides would reduce by over 30 percent if productions of compost fertilizers were increased and its popular usages were ensured throughout the country.
Side by side ensuring food security by increased crop productions, adequate use of composts would help regaining lost population of the extinct insecticides, earthworms, birds and fishes and maintain ecology, bio-diversity and environment.
Successful implementation of the "One House, One Farm' programme and building mass awareness among the farmers by disseminating the message through information communication technology (ICT) could play the most vital roles, they said.
Thousands of the small and marginal farmers, poor, distressed and landless people have been earning good profits and alleviating poverty by producing composts in their homesteads and selling those to the farmers throughout the year.
Farmers Echahaq Ali, Mahmudul Islam and Abul Kalam told BSS that they have been getting excellent yields of Boro and T-Aman using adequate compost fertilizers and only 23-kg urea per bigha in place of previous 35 kg by adopting LCC method.
Head of Agriculture of RDRS Dr MG Neogi told that increased use of composts would help increasing crop productions along with improving environment, ecology and bio-diversity amid the adverse impacts of the ongoing global climate changes.

Source: www.newstoday.com.bd, 21 OCt. 2010

পোলট্রি বর্জ্য থেকে জৈব সার

পোলট্রি বর্জ্য থেকে জৈব সার

জৈব পদার্থ হলো মাটির প্রাণ। মাটির প্রাণ বলে পরিচিত এই জৈব পদার্থ আমাদের দেশের জমিতে আছে মাত্র ১ ভাগ বা তারও কম। অথচ এটা থাকার কথা শতকরা ৩ থেকে ৫ ভাগ। প্রয়োজনীয় জৈব পদার্থের অভাবে মাটির উর্বরা শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে।

অন্যদিকে রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে মাটির গুণাগুণ মারাত্মকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। মাটি ফসল চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে পোলট্রি বর্জ্য জৈব সারে পরিণত না করে যেখানে-সেখানে ফেলানোর ফলে মাটি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। সেই সাথে জৈব নিরাপত্তাও বিঘিíত হচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে পোলট্রি একটি বিকাশমান শিল্প। খামার এবং অন্যান্য মিলিয়ে সারদেশে মোরগ-মুরগীর সংখ্যা প্রায় ২০ থেকে ২২ কোটি। এ সব মোরগ-মুরগী থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ পোলট্রি বর্জ্যরে পাওয়া যায় তার পরিমাণ প্রায় ১.৫ থেকে ২ কোটি টন। বিশাল এই পোলট্রি বর্জ্য সঠিক ব্যবস্খাপনার অভাবে মাটি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রায় ১১ মিলিয়ন হেক্টর চাষযোগ্য জমিতে বিপুল পরিমাণ জৈব পদার্থের চাহিদা থাকার পরও আমরা জৈব সার উৎপাদন ও জমিতে ব্যবহারে উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছি।

এ সমস্যার উল্লেখযোগ্য সমাধান আসতে পারে যদি সঠিকভাবে পোলট্রি বর্জ্যরে ব্যবস্খাপনা করে তা থেকে জৈব সার তৈরি করা হয়। অবশ্য তৈরি করা হলেই সমস্যা শেষ নয়। তৈরি করা সার ব্যবহার এবং বাজারজাতকরণে সরকারি অনুমোদনও থাকতে হবে। এটা করা গেলে লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমিতে প্রয়োজনীয় জৈব পদার্থ জোগান যেমন দেয়া যাবে, তেমনি রাসায়নিক সারের ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতাও কমানো যাবে। সেই সাথে বিপুল অংকের টাকা ব্যয় করে বিদেশ থেকে রাসায়নিক সার আমদানিও কমানো যাবে।

অথচ আমাদের চাষযোগ্য জমির আগামী দিনের কথা ভাবতে হলে জৈব সারের মানদণ্ড তৈরি করা খুবই জরুরি। বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে সরকারের জৈব সার তথা কম্পোস্টের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারের নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিৎ। পোলট্রির বর্জ্য ব্যবস্খাপনার মাধ্যমে যদি জৈব সার তৈরির সুযোগ দেয়া হয় তাহলে তা আমাদের কৃষিকে সামনের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নেবে। চাষিদের সারের জন্য লাইন দিতে হবে না। সেটা না হলে তাদের সময় বাঁচবে, চাষের ক্ষেত্রে ব্যয়ও কমবে। বìধ হবে চাষিদের হয়রানি তথা সার রাজনীতি। চাষির উৎপাদন ব্যয় কমলে বাজারের দ্রব্য মূল্যের ওপরও তার প্রভাব পড়বে। ফলে কৃষিতে রচিত হবে চাষিদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা।
Source:
http://bangladeshagri.com

ইউরিয়ার বিকল্প মুরগির বিষ্ঠাধানের উৎপাদন খরচ কমবে প্রায় অর্ধেক তাওহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জমির উর্বরতা রক্ষা এবং উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের কৃষি গবেষকরা বিকল্প পদ্ধতি উদ্ভাবনে প্রতিনিয়তই গবেষণা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ধান চাষের ক্ষেত্রে পোলট্রি শিল্পের প্রধান বর্জ্য তথা মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করে রাসায়নিক সারের (ইউরিয়া) ব্যবহার শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ কমাতে এবং জমির উর্বরতা বাড়িয়ে ফসলের উৎপাদন ১৫ ভাগ বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন। যা মোট উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দিতে পারে।
২০০৮ সালে 'বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)'-এর অর্থায়নে 'ধানের বৃদ্ধি, ফলন ও মানের ওপর মুরগির বিষ্ঠা, গুঁড়া ও গুটি ইউরিয়ার প্রভাব' শীর্ষক তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের মাঠ গবেষণাগারে গবেষণা শুরু হয়। গবেষণায় প্রকল্প প্রধান হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহমান সরকার এবং তাঁকে সহযোগিতার জন্য একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদুল হক চৌধুরী (বর্তমানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য) এবং পিএইচডি গবেষক মো. হুমায়ুন কবীরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁদের গবেষণার যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এরই মধ্যে তিনটি বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
সারের প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে গবেষণা সহকারী হুমায়ুন কবীর জানান, ধান রোপণের আগে জমি তৈরির সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ মুরগির বিষ্ঠা জমিতে দিতে হবে। তবে সরাসরি ওই বিষ্ঠা দেওয়া যাবে না। এর আগে অবশ্যই কমপক্ষে সাত দিন মুরগির বিষ্ঠা পচিয়ে নিতে হবে। এ জন্য মাটির ওপর খোলা অবস্থায় বিষ্ঠা রেখে দিলেই চলবে। তবে উপরে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। জমিতে ইউরিয়ার পরিবর্তে সার হিসেবে শুধুই মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করা হলে হেক্টরপ্রতি পাঁচ টন বিষ্ঠা প্রয়োজন হবে। আবার গুটি ইউরিয়ার সঙ্গে একত্রে প্রয়োগ করলে হেক্টর প্রতি আড়াই টন বিষ্ঠা দিলেই চলবে।
অধ্যাপক ড. আবদুর রহমান সরকার জানান, দেশে পোলট্রি খামার বাড়ছে। এসব খামারে প্রতিনিয়তই বিপুল পরিমাণ পোলট্রি বর্জ্য তথা মুরগির বিষ্ঠা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বর্জ্য ফেলে না দিয়ে যথাযথ উপায়ে কৃষি জমিতে প্রয়োগ করা হয় তবে রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেকাংশে কমে যাবে। তাঁর মতে, দেশে বছরে ইউরিয়া সারের চাহিদা প্রায় ২৮ লাখ টন হলেও উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন। ফলে সরকারকে মোটা অংকের অর্থ খরচ করে বিদেশ থেকে ১২-১৩ লাখ টন সার আমদানি করতে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, গুঁড়া ইউরিয়া সারের পরিবর্তে সঠিক মাত্রায় গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে ধান চাষে শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ইউরিয়া অনায়াসে সাশ্রয় সম্ভব। আমন মৌসুমে হেক্টরপ্রতি শতকরা ২৪ ভাগ এবং বোরো মৌসুমে শতকরা ২৩ ভাগ উৎপাদন খরচ কমেছে। অন্যদিকে ধানের মোট উৎপাদন হেক্টরপ্রতি শতকরা ১৫ ভাগ বেড়েছে।
গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. আবদুর রহমান বলেন, ইউরিয়া সারের পরিবর্তে জৈব সার হিসেবে মুরগির বিষ্ঠা অনেকটাই কার্যকর। চাষের শুরুতে মাটিতে মিশে যাওয়ার ফলে এর গুণাগুণ দীর্ঘদিন স্থায়ী থাকে। বিষ্ঠা নাইট্রোজেন উৎপাদন করে গাছ সবুজ ও সতেজ রাখে।
Source: Daily Kalerkantho